আওয়ামী নেতার বাড়িঘর ভাংচুর
সিলেটে আওয়ামিলীগ নেতার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও ভয়াবহ অগ্নিসংযোগ
নিজেস্ব প্রতিবেদক
আপলোড সময় :
২৪-০৫-২০২৫ ০৪:১৮:৩৮ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৪-০৫-২০২৫ ০৪:২৩:২৭ অপরাহ্ন
সিলেট জেলা প্রতিনিধিঃ গত ২২ই মে ২০২৫ রোজ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধা ৭:৩০ ঘটিকার সময় উপজেলার জানাইয়া গ্রামের আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ আব্দুল খালিক (৫৭) বাড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, মোঃ আব্দুল খালিকের বড় ছেলে যুক্তরাজ্য প্রাবাসী, মোঃ আবু হাসান সোহাগ (২৭) ও উনার মা বিশ্বনাথ উপজেলা মহিলা আওয়ামীলিগের সভাপতি, মোছাঃ রাহিমা বেগম (৫৪) নিজ বাসস্থানে অবস্থান করছেন বলে গুজব উঠলে, সিলেট জেলা ও বিশ্বনাথ উপজেলা ছাত্রদল, যুবদল, শিবির ও ছাত্রসমন্বয়ক নেতাকর্মিদের ৫০ থেকে ৬০ জনের একটি গ্রুপ আনুমানিক সন্ধা ৭টা ৩০ থেকে ৭টা ৪০ মিনিটের সময় বাড়িতে ঢুকে প্রথমে বাড়ির উঠানের একটু সামনেই গরুর ফার্মে ও ফার্মের পাশেই সি.এন.জি রাখার স্থানে একটি সি.এন.জি'তে ভাংচুর করে ও আগুন লাগিয়ে দেয়। তারপর মেইন বাড়িতে তালাবদ্ধ ঘরের গেইটের তালা ভেঙ্গে ঘরের ভেতরে ভাংচুর, স্বার্ণালংকার ও মালামাল লুটপাট করে। পরবর্তীতে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিভানো সম্ভব হলেও যা ক্ষয়ক্ষতি হবার তা হয়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে আরও জানা গেছে, এর আগেও গত বছরের ৫ই আগস্ট ছাত্রজনতার আন্দোলনে দেশে সরকার পতনের পর পরেই সন্ধা ৬ টা থেকে ৭ টার মধ্যে বিশ্বনাথ নতুন বাজারে মোঃ আব্দুল খালিক সাহেবের ব্যবসায় প্রতিষ্টান "আব্দুল খালিক ট্রেডার্স" এ হামলা করে ভাংচুর অগ্নিসংযোগ, মালামাল ও নগদ টাকা লুটপাট করে স্থানীয় ছাত্রদল, যুবদল, শিবির ও ছাত্রজনতা। পরক্ষণেই তাদের চালের গুদাম ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় বিক্ষোপ্ত ছাত্র-জনতা এতে করে গুদামঘরের সামনের সাড়িতে থাকা দোকানগুলোতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতার আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ সময়ে মোঃ আব্দুল খালিকের মেজো ছেলে ও ম্যানাজারকে গুরুতর অবস্হায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের ঘনিষ্ট এক আত্নীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এর বরাতে জানা যায় যে, দেশে সরকার পতনের পূর্বে ২০২৪ সালের জুলাই মাসে মেজো ছেলে ছাড়া তারা স্বপরিবারে যুক্তরাজ্যে বড় ছেলের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান। দুই সপ্তাহ পর দেশে ফিরে আসার কথা থাকলে ও দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আর ফিরেন নি। তবে উনার স্ত্রীর সরকারি চাকুরি থাকার কারনে বিশেষ প্রটোকল নিয়ে গত বছরের ৩১শে আগষ্ট দেশে ফিরলে, ওদিনই তাদের বাড়িতে স্থানীয় বি.এন.পি, জামাত, শিবির ও ছাত্রজনতারা বিকেলে হামলা করে বসে। তাই তিনি মধ্যরাস্তা থেকেই অন্য এক আত্নীয়ের বাড়িতে অবস্থান করেন। এভাবে তিনি নানান আত্নীয়ের বাসায় অবস্থান করতে থাকলে, সর্বশেষ ৩০শে সেপ্টেম্বর, স্কুল হতে ফিরার পথে সাদা পোশাকে কয়েকজন উনাকে গ্রেপ্তার করে সিলেটের শহরের কোন এক থানায় নেওয়া হলে, উনি জানতে পারেন, তিনি ও উনার স্বামী, মোঃ আব্দুল খালিকের নামে অনেকগুলো মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং এতে ওনাদের ছেলেদের নাম রয়েছে। এতে করে উনি উপর মহলে রাজনীতি ও স্থানীয়দের মোচলেকা ও সরকারী চাকুরি আর করবেন না বলে কোনভাবে পার পেয়ে যান। কিছুদিন পর স্থানীয় নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর উত্তানে শেষমেষ চাকরী ছাড়তে বাধ্য হন। তবে এখন তিনি কেথায় আছেন তা আর তিনি জানেন না তবে এলাকার মানুষরা ধারণা করছেন, বর্তমানে মেজো ছেলে ছাড়া উনারা স্ব-পরিবারে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে গেছেন। এবং মেজো ছেলে কোথাও গা ঢাকা দিয়েছেন তা কেহ জানেন না। এ বিষয়ে দৌলতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এর সাথে আরো বিস্তারিত কথা হলে তিনি আরো জানান, এই পরিবার দীর্ঘ তিন যুগের কাছাকাছি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত। মোঃ আব্দুল খালিক (৫৭) সাবেক সাংগঠনিক ও বর্তমান সিনিয়র সদস্য বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং উনার স্ত্রী মোছা রাহিমা বেগম (৫৪) উপজেলা মহিলা আওয়ামীলীগ এর সভাপতি হওয়ায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এই পরিবার নানানভাবে সমাজে প্রতিপদ্ধি স্থাপন করত, সরকারি কাজ থেকে শুরু করে চাকুরী পর্যন্ত তাদের হস্তক্ষেপ বা সুপারিশ থাকত এবং বিদ্যালয়গুলোকে তিনি এক রাজনৈতিক আড্ডাখানা হিসাবে গড়ে তুলেছেন। এবং অন্যান্য শিক্ষকরা উনার ভয়ে উঠাবসা করতো। এবং বিশ্বনাথ উপজেলায় চাল ও গমের ব্যবসায়ের একচিটিয়া নিয়ন্ত্রণ ছিল এই পরিবারের হাতে। এ বিষয়ে আপনারা বিশ্বনাথ উপজেলার প্রতেকটা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে দেখতে পারেন। এবং জুলাই অভ্যুত্যানে ছাত্র জনতার ওপর গুলি ও বোমা ছোঁড়ার অন্যতম নির্দেশদাতা এই পরিবার। জানা গেছে ওনাদের নির্দেশনা পেয়েই সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বোমা ও ককটেল বিস্ফোরন ও সাধারণ জনতার ওপর গুুলিবর্ষণ করে তাদের পালিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামিলীগ এর নেতাকর্মীরা এবং বিশ্বনাথ থানায় অগ্নিসংযোগ ঘটায়। এই বিষয়ে কথা হলে, বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ওনাদের বাড়িতে ও দোকানে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ এর ঘটনা শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত স্বাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে এই পরিবারের বিরুদ্ধে আমি যা শুনেছি- অন্যান্য মামলার প্রস্তুতিও চলছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SM Sohel
কমেন্ট বক্স